শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার


শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার

ইন্টারনেটকে মানবজাতির অন্যতম মূল্যবান উপহার হিসেবে ধরা হয়। গত ১০ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে এটি দ্রুত বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রেও ইন্টারনেটের ব্যবহার একটি বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। একাধিক কারণ আছে, যা প্রমাণ করে যে ইন্টারনেট শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত সুবিধাজনক।

বর্তমান যুগে ইন্টারনেট মানুষের মৌলিক চাহিদার স্তরে পৌঁছে গেছে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইন্টারনেট মানুষের জন্য নিয়ে এসেছে অসংখ্য সুবিধা। শিক্ষা ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার অত্যন্ত কার্যকরী। এটি শুধু শিক্ষার্থীদের জন্যই নয়, শিক্ষকদের জন্যও অসংখ্য সুবিধা প্রদান করে।ইন্টারনেট আসলে জ্ঞানের একটি বিশাল ভাণ্ডার। এখানে আপনি একাডেমিক থেকে শুরু করে যেকোনো ধরনের তথ্য খুঁজে পেতে পারেন।

শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহারইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। এর মধ্যে গুগল, ইয়াহু এবং বিং বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

বাংলাদেশে সাধারণত গুগল সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহৃত হয়, যা সারা বিশ্বেই অত্যন্ত জনপ্রিয়।

আরো পড়ুনঃ মানবদেহের লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা

শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার 

শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার অত্যন্ত বিস্তৃত এবং অপরিহার্য। এটি তথ্য সংগ্রহ, গবেষণা, এবং যেকোনো বিষয়ের গভীরতা অনুধাবনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আধুনিক যুগে শিক্ষার্থীরা গুগলের মাধ্যমে তাদের অ্যাসাইনমেন্ট বা অন্যান্য সমস্যার সহজ সমাধান খুঁজে নেয়, যা এখন এক সাধারণ বাস্তবতা।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ তথ্য পাওয়া যায়, যা আমরা যেকোনো সময় অ্যাক্সেস করতে পারি। কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে রেজাল্ট দেখা পর্যন্ত, আমাদের দৈনন্দিন শিক্ষাগত কার্যক্রমের প্রায় সবকিছুই ইন্টারনেটের উপর নির্ভরশীল।

শিক্ষার্থীদের জন্য ইন্টারনেট অগণিত সুবিধা প্রদান করে এবং তাদের জ্ঞান অর্জনের প্রক্রিয়াকে সহজ ও গতিময় করে তোলে।

তাহলে, আসুন আরও বিস্তারিতভাবে জানি শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ভূমিকা এবং এর ব্যবহার।

ব্যয় সাশ্রয় 

উন্নয়নশীল দেশগুলোর শিক্ষাক্ষেত্রে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হলো উচ্চ ব্যয়। সেভ দ্য চিলড্রেনের কর্মকর্তা রাশেদা আক্তার বলেন, অনেক বাবা-মা মনে করেন যে সন্তানকে স্কুলে পাঠানোর চেয়ে কাজে পাঠানো বেশি লাভজনক, কারণ এতে কিছু উপার্জন সম্ভব।

ইন্টারনেট শিক্ষার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা একটি জাতির মেরুদণ্ড। এটি অনলাইন ক্লাস এবং ভিডিও টিউটোরিয়ালের মাধ্যমে সাশ্রয়ী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করে, যা সবার জন্য সহজলভ্য।

ইন্টারনেটের আগের সময় শিক্ষার্থীদের কোচিং সেন্টারে গিয়ে প্রচুর অর্থ খরচ করতে হতো এবং এর জন্য তাদের অনেক পরিশ্রম করতে হতো। কিন্তু এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইনে শেখার প্রক্রিয়া অনেক সহজ, সাশ্রয়ী এবং সুবিধাজনক হয়ে উঠেছে।

আমরা সবাই নিশ্চয়ই টেন মিনিট স্কুলের নাম শুনেছি। এটি আয়মান সাদিকের প্রতিষ্ঠিত একটি ইন্টারনেটভিত্তিক শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে হাজারো শিক্ষার্থী এখন বিনামূল্যে বা কম খরচে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে।

সময় বাঁচায়

ইন্টারনেট শিক্ষার্থীদের মূল্যবান সময় সাশ্রয়ে সহায়তা করে। একজন শিক্ষার্থীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হলো তার সময়, এবং ইন্টারনেট এটির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।ইন্টারনেটকে জ্ঞানের এক বিশাল ভাণ্ডার বলা হয়। শিক্ষার্থীরা এখানে সহজেই তাদের প্রয়োজনীয় পড়ার বিষয়বস্তু খুঁজে পেতে পারে। ইন্টারনেটের আগের যুগে প্রাসঙ্গিক তথ্য সংগ্রহ ছিল একটি সময়সাপেক্ষ এবং কষ্টসাধ্য কাজ। তখন শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বই পড়তে হতো, পাঠাগারে যেতে হতো, কিংবা শিক্ষকের সাহায্য নিতে হতো।

শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহারকিন্তু এখন ইন্টারনেটের কারণে এই সমস্যা অনেকটাই দূর হয়েছে। বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীরা খুব সহজেই তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে বের করতে পারে, যা তাদের মূল্যবান সময় সাশ্রয় করে।

ইন্টারনেট আমাদের জীবনে সবচেয়ে বড় উপকার করেছে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটিয়ে। এখন আমরা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া, মেসেজিং অ্যাপ এবং চ্যাট ফোরামের মাধ্যমে শিক্ষকদের সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ করতে পারি।

আজকাল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর শিক্ষকরা প্রথম ক্লাসেই বলে থাকেন, "নিজেরা একটি হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক গ্রুপ তৈরি করো এবং আমাকে সেখানে যুক্ত করো।" এর ফলে শিক্ষকরা পরবর্তী ক্লাসের তথ্য, নোট বা গুরুত্বপূর্ণ আপডেট সেই গ্রুপে সহজেই শেয়ার করতে পারেন।

এ ধরনের গ্রুপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মুহূর্তেই প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে যায়। তাছাড়া, ক্লাসের কোনো বিষয় বুঝতে সমস্যা হলে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে আলোচনা করে এর সমাধান করতে পারে।

কার্যকরী শিক্ষা এবং শেখার টুলস 

বর্তমানে ইন্টারনেট কার্যকরী শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি প্রধান হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। শিক্ষকরা তাদের ক্লাসের নোট ও সাজেশন বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ফোরাম, বা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে আপলোড করেন, যা শিক্ষার্থীরা প্রয়োজন অনুযায়ী ডাউনলোড বা সরাসরি ব্যবহার করতে পারে।

টিউটোরিয়াল ভিডিও এবং নোট ব্যবহার করে শিক্ষার বৈচিত্র্য বৃদ্ধি করা সম্ভব। শিক্ষকরা পাওয়ারপয়েন্ট স্লাইড, অ্যানিমেশন, এবং বিভিন্ন ইমেজ যুক্ত করে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারেন। এসব আধুনিক টুলসের ব্যবহারে ইন্টারনেটের জনপ্রিয়তা শিক্ষা ক্ষেত্রে দিন দিন বাড়ছে।

মানসম্মত শিক্ষার সুযোগও ইন্টারনেটের মাধ্যমে সহজলভ্য হয়েছে। শিক্ষার্থীরা ইউটিউব টিউটোরিয়াল বা বিভিন্ন আর্টিকেলের মাধ্যমে বিনামূল্যে উচ্চমানের শিক্ষা অর্জন করতে পারে, অথবা নির্ভরযোগ্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে ফি প্রদান করে প্রফেশনাল কোর্স করতে পারে।

শিক্ষকেরা অতিরিক্ত অধ্যয়নের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে লেসন বা কুইজ প্রদান করতে পারেন। তাঁরা লেকচার রেকর্ড করে সংরক্ষণ করতে পারেন এবং পরে শিক্ষার্থীদের রিভিশনের জন্য শেয়ার করতে পারেন, যা সাধারণ নোট থেকে পড়ার চেয়ে অধিক কার্যকরী হতে পারে।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রাসঙ্গিক বিষয়বস্তু খুঁজে বের করা এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা যখন কোনো সমস্যায় পড়ে, তখন তারা ইন্টারনেট থেকে দ্রুত প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পেতে সক্ষম। ইন্টারনেট প্রসারের আগে, ছোট তথ্যের জন্য অনেক বই খুঁজতে হতো বা শিক্ষক/ম্যাডামের সাহায্য নিতে হতো, যা অনেক সময় নষ্ট করতো। কিন্তু এখন, বিভিন্ন ওয়েবসাইট শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একাডেমিক তথ্য প্রদান করছে এবং অ্যাসাইনমেন্টে সহায়তা করছে, যা শিক্ষার প্রক্রিয়াকে অনেক সহজ ও দ্রুততর করেছে।


ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইন শিক্ষা

করোনাকালীন সময়ে আমরা ব্যাপকভাবে অনলাইন শিক্ষার গুরুত্ব এবং এর সুবিধা সম্পর্কে জানতে পারি। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার পর, কিছু প্রতিষ্ঠান অনলাইনে পাঠদান চালিয়ে যায়।

বর্তমানে প্রায় প্রতিটি শিক্ষার্থীই অনলাইন শিক্ষা সম্পর্কে সচেতন, এবং করোনাকাল তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা এনে দিয়েছে। এখন তারা ঘরের আরামদায়ক পরিবেশে বসে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি শিখতে পারে।

শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহারযদি ক্লাসের কোনো বিষয় নিয়ে দ্বিধা থাকে বা কোন টপিক বুঝতে সমস্যা হয়, তাহলে তারা অনলাইনে সহজেই বিষয়টি শিখে নিতে পারে।

ক্যারিয়ার প্লানিং

ইন্টারনেটের আগে শিক্ষার্থীদের জন্য সঠিক জায়গায় সঠিক মানুষ খুঁজে পাওয়া এবং শেখার উপযুক্ত সুযোগ তৈরি করা ছিল একটি চ্যালেঞ্জ। তবে, ইন্টারনেটের আবির্ভাবে এই কাজ অনেক সহজ হয়ে গেছে।

সঠিক নির্দেশনা ছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য ভবিষ্যতে ভালো ক্যারিয়ার পরিকল্পনা করা কঠিন হতে পারে। তবে, তারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান করতে পারে। ইন্টারনেটে বিভিন্ন রিসোর্স রয়েছে, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যতের লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা তৈরি করতে পারে।

এছাড়া, তারা ক্যারিয়ার গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং সেবা নিতে পারে।

নিজেকে আপ টু ডেট রাখা 

সেল্ফ স্টাডিতে ইন্টারনেটের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেল্ফ স্টাডির চর্চা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং এর ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে এর ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। এটি নিজেকে সেল্ফ স্টাডির জন্য একটি অপরিহার্য টুল হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে।

শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহারএক্ষেত্রে গুগল, ইয়াহু, বিং আমাদের প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পেতে সহায়তা করে। যদিও বাংলাদেশে বেশিরভাগ মানুষ তথ্য অনুসন্ধানের জন্য গুগলই ব্যবহার করে থাকে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে কেউ 
প্রচুর জ্ঞান অর্জন করতে পারে এবং নতুন নতুন বিষয় শিখতে পারে।
একটি উদাহরণ ভাবুন, গ্রামে থাকা একটি ছেলে পড়তে বসেছে কিন্তু একটি নির্দিষ্ট টপিক বুঝতে পারছে না। তার আশেপাশে এমন কেউ নেই যে তাকে ওই টপিকটা বুঝিয়ে দিতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ইন্টারনেটই তার একমাত্র ভরসা, কারণ শিক্ষার্থীরা যেকোনো সময়ে ইন্টারনেটে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পেতে পারে।

ইউটিউব এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের জন্য ক্লাস বা কোর্স অফার করে, যার মাধ্যমে তারা ঘরে বসে অনলাইনে বিভিন্ন বিষয় শিখতে পারে।

শিক্ষার্থীরা বাইরের কার্যকলাপ এড়িয়ে চলছে 

 শারীরিক ব্যায়াম ও বাইরে খেলাধুলার অভাবে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। এর পাশাপাশি সারাদিন কম্পিউটার বা মোবাইলের সামনে কাটানোর কারণে ঘাড়, কাঁধ বা চোখের বিভিন্ন সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

ইন্টারনেটে সহজেই অ্যাক্সেসযোগ্য বিভিন্ন গেম, যেমন ফ্রি-ফায়ার বা পাবজি, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। এসব গেমের মধ্যে অনেক সময় সহিংসতা অন্তর্ভুক্ত থাকে, যা শিক্ষার্থীদের মানসিক এবং আচরণগত ক্ষতির কারণ হতে পারে।

উপসংহার

মনে রাখবেন, আমাদের সকলেরই উচিত শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ১০টি ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন থাকা, তেমনি এর কিছু অপকারিতার ব্যাপারেও সতর্ক থাকা। কারণ, ইন্টারনেটের সঠিক এবং সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে না পারলে ভবিষ্যতে একটি অন্ধ জাতি তৈরি হতে পারে, যার বোঝা আমাদেরকেই বহন করতে হবে। যেমন আমরা এখন ইন্টারনেট এবং আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনেক কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে পারি, ঠিক তেমনই ইন্টারনেট আমাদের সুন্দর জীবনটাকেও এক ক্লিকেই ধ্বংস করতে সক্ষম। সুতরাং, সচেতন থাকুন এবং ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করুন।


Comments

Popular posts from this blog

বিউটিফুল স্পট কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত(Beautiful spot Cox's Bazar beach)

কফির বীজ সংরক্ষণের উপায়

আমড়া খাওয়ার উপকারিতা